মোবাইলকে ফাস্ট করার ৪০টি কার্যকর উপায়
মোবাইলকে ফাস্ট করার ৪০টি কার্যকর উপায়: ধীরগতির ফোনকে আগুনের গতিতে রূপান্তর করুন
বর্তমান সময়ে একটি স্লো মোবাইল ফোন আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, পড়াশোনা, ব্যবসা বা কাজের গতিকে পুরোপুরি নষ্ট করে দিতে পারে। যারা মোবাইলে ইউটিউবিং করেন, ফ্রিল্যান্সিং করেন, ভিডিও এডিটিং বা ক্লাস অ্যাটেন্ড করেন—তাদের জন্য একটি স্লো ফোন যেন যন্ত্রণা!
এই আর্টিকেলে আপনি শিখবেন ৪০টি প্র্যাকটিক্যাল টিপস যার মাধ্যমে আপনার অ্যান্ড্রয়েড বা আইফোনের গতি ৪ গুণ পর্যন্ত বাড়াতে পারবেন।
মোবাইল ধীর হওয়ার কারণগুলো চিহ্নিত করা
১. র্যাম (RAM) কম
যাদের ফোনে ২GB বা ৩GB RAM আছে, সেখানে অ্যাপ একাধিক হলে ফোন হ্যাং করে।
২. স্টোরেজ ফুল
Internal Storage ফাঁকা না থাকলে সিস্টেম কাজ করতে পারে না।
৩. অনেক অ্যাপ ইনস্টল
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বেশি থাকলে RAM ও CPU ব্যস্ত থাকে।
৪. সফটওয়্যার আপডেট না থাকলে
পুরানো OS-এ বাগ থেকে যায়, যা পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে।
৫. পুরনো ব্যাটারি
পুরনো ব্যাটারি পাওয়ার ডেলিভারি কমায়, এতে প্রসেসর ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
ফোনকে ফাস্ট করার মূল ৪০টি উপায়
১. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইনস্টল করুন
ফোনে থাকা ব্যবহার না করা অ্যাপগুলো RAM ও স্টোরেজ খেয়ে ফেলে।
উদাহরণ:
– আপনি TikTok ব্যবহার করেন না, অথচ ইনস্টল করা আছে।
– Game 1GB+, কিন্তু আপনি মাসে ১বার খেলেন।
২. ডুপ্লিকেট ফাইল খুঁজে ডিলিট করুন
App সাজেশন:
– Files by Google > Clean > Duplicate files
৩. ক্যাশ ক্লিয়ার করুন প্রতিদিন
– Settings > Apps > Storage > Clear Cache
– হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, ফেসবুক – এদের ক্যাশ অনেক বেশি জমে
৪. Gallery পরিষ্কার করুন
ভিডিও এডিটিং বা ফটো তোলার কারণে গ্যালারিতে GB-GB ফাইল জমে যায়। অপ্রয়োজনীয় স্ক্রিনশট বা ডাউনলোড ক্লিয়ার করুন।
৫. WhatsApp মিডিয়া অটো-ডাউনলোড বন্ধ করুন
– Settings > Storage & data > Media auto-download > সব অপশন Off
৬. Facebook Lite ব্যবহার করুন
মূল অ্যাপের তুলনায় Facebook Lite ৬ গুণ কম র্যাম খায়।
৭. YouTube Go ব্যবহার করুন (প্রয়োজনে)
এটি লো-র্যাম ফোনের জন্য সেরা অপশন।
৮. Launchers ব্যবহার করবেন না
ফ্যান্সি Launcher ফোনকে অলস করে তোলে।
৯. ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা অফ করুন
– Settings > Apps > Data Usage > Background data > Off
১০. স্ট্যাটিক ওয়ালপেপার ব্যবহার করুন
লাইভ ওয়ালপেপার RAM ও Battery drain করে।
Developer Option ব্যবহার করে স্পিড বাড়ানো
১১. Developer Option চালু করুন
– Settings > About Phone > Build Number এ ৭ বার চাপ দিন।
১২. Animation Scale কমিয়ে দিন
– Window animation scale = 0.5x
– Transition animation scale = 0.5x
– Animator duration scale = Off
১৩. Background Process Limit কমান
– Background process limit > At most 2 processes
ব্যাটারি ও পাওয়ার অপ্টিমাইজেশন
১৪. Battery Saver ব্যবহার করুন
ফোনকে CPU ভারমুক্ত করে।
১৫. High Brightness কমান
Display যত বেশি আলো দেয়, প্রসেসিং তত কম হয়।
১৬. Unused Sensors Off করুন
WiFi, Bluetooth, NFC – বন্ধ রাখুন প্রয়োজন না থাকলে।
সিস্টেম ও অ্যাপ অপ্টিমাইজেশন
১৭. ফোন রিস্টার্ট দিন সপ্তাহে ২ বার
RAM রিফ্রেশ হয়, System নতুন করে শুরু হয়।
১৮. Software আপডেট করুন
– Settings > System > Software Update
১৯. System Cache Partition ক্লিয়ার করুন (Recovery Mode থেকে)
২০. সবসময় APK না ইনস্টল করা
অনির্ভরযোগ্য অ্যাপ ফোনে ভাইরাস আনে।
Storage Clean-up & Optimization
২১. Internal storage ২০% খালি রাখুন
৪GB খালি রাখলে পারফরম্যান্স ভালো থাকে।
২২. Google Photos Auto Backup চালু করুন
ডেটা ক্লাউডে রেখে ফোন ফাঁকা রাখুন।
২৩. Download Folder ক্লিন করুন
অনেক সময় অজান্তে সেখানে GB জমে।
২৪. Telegram & Messenger মিডিয়া ক্লিয়ার করুন
App ব্যবস্থাপনা
২৫. Lite ভার্সনের অ্যাপ ব্যবহার করুন
Facebook Lite, Messenger Lite, Opera Mini
২৬. Game Mode চালু করুন (যদি থাকে)
২৭. Play Store Auto Update Off করুন
২৮. Cleaner অ্যাপ বাদ দিন (অনেক সময় নিজেই সমস্যা তৈরি করে)
২৯. Default App Reset করুন
– Settings > Apps > Default apps > Reset all
আরও অ্যাডভান্স টিপস
৩০. Root না করা
Root করলে ফোন দুর্বল হয়ে যায় এবং স্লো হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৩১. Custom ROM ব্যবহার করবেন না যদি অভিজ্ঞ না হন।
৩২. Cloud Storage ব্যবহার করুন
– Google Drive, Dropbox ইত্যাদি
৩৩. SD Card থেকে অ্যাপ চালাবেন না
SD Card অনেক ধীর গতির, ফোন স্লো হয়।
৩৪. Always-on Display Off করুন
৩৫. Fingerprint ও Face Unlock Delay কমান
৩৬. App Install করার সময় Permission চেক করুন
৩৭. Game Booster চালু করুন (গেম খেললে)
৩৮. App Cloning Off করুন
এক অ্যাপের দুই ভার্সন রাখলে RAM ডাবল খায়।
৩৯. Factory Reset করার আগে Backup রাখুন
৪০. যদি কিছুতেই সমাধান না হয়
ফোন পরিবর্তনের সময় হয়ে গেছে। আজকাল ৪/৬GB RAM, 128GB স্টোরেজ ফোন ১২-১৫ হাজার টাকাতেই পাওয়া যায়।
একটি ফোন ধীর হয়ে যাওয়া মানেই তা খারাপ নয় — বরং আমাদের ব্যবহার পদ্ধতির ওপরেই অনেক কিছু নির্ভর করে। উপরের ৪০টি উপায় আপনি ধাপে ধাপে প্রয়োগ করলে আপনার ফোনের গতি নিশ্চিতভাবেই বেড়ে যাবে। আপনি ভিডিও এডিটিং, গেমিং, বা অফিস কাজ — যাই করুন না কেন, ফোন যেন হয় আগুনের মতো ফাস্ট।
মোবাইল ফাস্ট নয় । সারা দিবেন